রেফারেন্স ভিত্তিক প্রমান
শহীদ রাষ্ট্রপতি আমাদের মহান স্বাধীনতার যে ঘোষক, সেই ঘোষণা 'স্বাধীনতা ঘোষণার দলিল' মেন্যুতে ভিডিও আকারে দেখার পর আর দ্বিধা থাকার কথা নয় যে তিনিই স্বাধীনতার ঘোষক। তা সত্ত্বেও কিছু কিছু পারিপার্শিক দলিল নীচে পাঠকের জন্য উপস্থাপন করা হলো:
0১.
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ দলিল পত্র‘ গ্রন্থের তৃতীয় খন্ডে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার প্রমান যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তা’ হুবহু নিম্নরূপ:
শিরোনাম
বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র (চট্টগ্রাম) হতে জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা
সূত্র
বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র, চট্টগ্রাম
তারিখ
* ২৭ মার্চ, ১৯৭১
মেজর জিয়ার প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা
Dear fellow freedom fighters,
I, Major Ziaur Rahman, Provisional President and Commander-in-Chief of Liberation Army to do hereby proclaim independence of Bangladesh and appeal for joining our liberation struggle. Bangladesh is independent. We have waged war for the liberation of Bangladesh. Everybody is requested to participate in the liberation war with whatever we have. We will have to fight and liberate the country from the occupation of Pakistan army.
Inshallah, victory is ours.
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহিম
প্রিয় সহযোদ্ধা ভাইয়েরা,
আমি, মেজর জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের প্রভিশনাল প্রেসিডেন্ট ও লিবারেশন আর্মি চীফ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা গোষণা করছি এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন জানাচ্ছি। বাংলাদেশ স্বাধীন। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে নেমেছি। আপনারা যে যা পারেন সামর্থ অনুযায়ী অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। আমাদেরকে যুদ্ধ করতে হবে এবং পাকিস্তানী বাহিনীকে দেশ ছাড়া করতে হবে।
ইন্শাল্লাহ, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।
*২৬ মার্চ ১৯৭১ রাত্র ২.১৫ মিনিটে (২৫ শে মার্চ মধ্যরাতে) তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং মেজর জিয়া ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল জানজুয়াকে গ্রেফতার করেন এরপর তিনি ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়ন অফিসার, জে সি ও এবং জোয়ানদের একত্রিত করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সাথে সাথে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তাকে তা জানানো হয়।
0২.
আর্জেন্টিনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা Buenos Aires Herald এর ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ প্রথম পৃষ্ঠার হেড লাইন ছিল, “Rebel government set up under army major”।
হেডলাইনের এই রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, মেজর জিয়া নিজেকে হেড অফ স্টেট ঘোষণা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন।
0৩.
১৯৭১ সালে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জনাব তাজউদ্দীন আহমদ। জনাব তাজউদ্দীন আহমদের রাজনৈতিক সচিব জনাব মঈদুল হাসান তাঁর লেখা “মূলধারা ৭১” গ্রন্থের ৫ ও ৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,
২৭ শে মার্চ সন্ধ্যায় ৮-ইবির বিদ্রোহী নেতা মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন বলে ঘোষণা দেন। মেজর জিয়া তাঁর প্রথম বেতার বক্তৃতায় নিজেকে ‘রাষ্ট্রপ্রধান’ হিসাবে ঘোষণা করলেও পরদিন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পরামর্শক্রমে তিনি শেখ মুজিবের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার কথা বলেন।”
0৪.
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে ইতিহাস বিকৃতির যতই চেষ্টা হৌক না কেন, ইতিহাসের গতিকে কেউ বিকৃত করতে পারবে না। ইতিহাস সঠিক রয়ে যায় জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে। এমনি একটি দলিল হলো বিলেতের ‘টাইম‘ ম্যাগাজিন। ১৯৮১ সালের ৮ জুন অর্থাৎ জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরের সপ্তাহেই প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রথম অনুচ্ছেদেই লিখেছে যে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান-ই ছিলেন আমাদের মহান স্বাধীনতার ঘোষক।
ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনটি যা’ লিখেছে তা’ হুবহু এবং তার বাংলা অনুবাদ নীচে দেওয়া হলো:
Ten years ago this spring, young Major Ziaur Rahman broadcast an electrifying message from a clandestine radio in the East City of Chittagong, proclaiming a rebellion against West Pakistan that ultimately created the nation of Bangladesh
অর্থাৎ, দশ বছর আগে এই বসন্তে তরুণ মেজর জিয়াউর রহমান পূর্ব চট্টগ্রামের একটি গোপন রেডিও থেকে একটি বৈদ্যুতিক বার্তা সম্প্রচার করে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন যা’ শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতিকে সৃষ্টি করেছিল।
0৫.
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন তা’ শেখ হাসিনা নিজে এবং তাঁর স্বামী ডঃ ওয়াজেদ মিয়া নিজ কানে শুনেছিলেন। সেই ঘোষণা থেকে তারা দু’জনই খুব উজ্জীবিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের ৯ ডিসেম্বর এক সাক্ষাৎকারে ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকা কে ডঃ ওয়াজেদ মিয়া নিজেই এই কথা জানান। পরবর্তীতে তাদের এই স্বীকারোক্তি ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’য় প্রকাশিত হয়েছিল। সেইরকম একটি প্রমান এইখানে ক্লিক করে দেখুন।
0৬.
২৬ শে মার্চ ২০১৫ সালকে ‘বাংলাদেশ দিবস‘ হিসাবে পালন করে নিউইয়র্ক স্টেইট সিনেট জে১০৪৮ রেজুলেশন পাস করে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিল এর ১৮তম ডিস্ট্রিক্ট এর সিনেটর মিঃ রুবেন ডিয়াজ প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন এবং তা’ সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়।
নীচে প্রস্তাবটির ভিডিও টেক্সট আকারে ইংলিশ ও তা বাংলায় অনুবাদ করে দেওয়া হলো:
(Voice of Senator Dean Skelos): Legislative legislation no 1048 by Senators Diaz and Connery celebrating March 26, 2015 as ‘Bangladesh Day’ whereas March 26 is the national independence day of Bangladesh. This day is celebrated in Bangladesh and all round the World in honour of country’s declaration of independence from Pakistan. In the late hour of March 25, 1971 in the start of Bangladesh liberation war in whereas at the time Ziaur Rahman broadcasted a message that the independent People’s Republic of Bangladesh had been established and whereas at this point March 26, 1971 the Bangladesh liberation war had broken out in the whole country.
It was the day that Bengali people stood up to the Pakistani army. In whereas after nine months long war Pakistani army finally surrendered unconditionally. Many lives were lost but Bangladesh as a country gained its freedom, its independence. Now therefore, be resulted the legislative body pauses deliberations to celebrate ‘Bangladesh Day’
(Voice of the President of the Senate): on the resolution, Senator Ruben Diaz
(Voice of the Senator Ruben Diaz): Thank you Mr President, ladies and gentlemen, good afternoon. Today I take this opportunity to express my appreciation and thanks to the leader of this Chamber.
The honourable Senator Dean Skelos and to you all of my colleagues for granting me the opportunity to introduce this resolution. You must know that on this important occasion Ziaur Rahman proclaimed to all the Bengalis people that independent People’s Republic of Bangladesh has been established. Ladies and gentlemen my colleagues, Mr President you should know that after nine long months of war the Pakistani army finally surrendered unconditionally. Many lives were lost, Bangladesh as a country gained its freedom and independence and that is why we are here today to remember the suffering and sacrifice of their hero and heroine. To conclude Mr President once again I want to acknowledge the delegation and express my appreciation to the Bangladeshi community that come all the way here from the New York City. I say Assalamualaikum.
বাংলা অনুবাদ
(সিনেটর ডিন স্কেলস এর কণ্ঠস্বর) সিনেটর ডিয়াজ এবং কোনারী কর্তৃক ২৬ শে মার্চ, ২০১৫ কে ‘বাংলাদেশ দিবস’ হিসাবে উদযাপন করা আইন প্রণয়ন নং ১০৪৮ যা’ ২৬ মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতা দিবস।
পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণার সম্মানে এই দিনটি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে পালিত হয়।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের শেষ প্রহরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় যেখানে জিয়াউর রহমান একটি বার্তা প্রচার করেন যে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এই সময়ে ২৬শে মার্চ, ১৯৭১ সারা দেশ জুড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় । এইটা সেইদিন যেইদিন বাঙালীরা পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ।
যেখানে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর পাকিস্তানী সেনারা অবশেষে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে, এতে অনেক প্রাণ ঝরে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশ একটি দেশ হিসেবে তার স্বাধীনতা, স্বাতন্ত্র অর্জন করেছে। এখন তাই, আইন প্রণয়ন সংস্থা ‘বাংলাদেশ দিবস’ উদযাপনের জন্য আলোচনায় বিরতি দিচ্ছে ।
(সিনেট এর সভাপতির কণ্ঠস্বর): প্রস্তাবে, সিনেটর রুবেন ডিয়াজ..
(সিনেটর রুবেন ডিয়াজ এর কণ্ঠস্বর): ধন্যবাদ মিঃ প্রেসিডেন্ট, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, শুভ বিকাল। আজকে আমি এই চেম্বারের নেতাকে আমার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতে সুযোগটি গ্রহণ করছি।
মাননীয় সিনেটর ডিন স্কেলোস এবং আমার সহকর্মীদের সবাইকে ধন্যবাদ এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে এই গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষে জিয়াউর রহমান সমস্ত বাঙালির কাছে ঘোষণা করেছিলেন যে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আমার সহকর্মীবৃন্ধ, মিঃ প্রেসিডেন্ট দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর অবশেষে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছিল । অনেক প্রাণ ঝরে গেছে, বাংলাদেশ একটি দেশ হিসাবে তার স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য অর্জন করেছে এবং সেই কারণেই আমরা আজ তাদের যুদ্ধের নায়ক-নায়িকাদের দুঃখ-কষ্ট ও আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে এখানে এসেছি। পরিশেষে,মিঃ প্রেসিডেন্ট, আমি আবারও বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদলকে স্বীকৃতি দিতে চাই এবং এত দূর নিউইয়র্ক সিটি থেকে আসা তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। আমি বলব আসসালামুয়ালাইকুম।